1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলাধুলা
  5. বিনোদন
  6. তথ্যপ্রযুক্তি
  7. সারাদেশ
  8. ক্যাম্পাস
  9. গণমাধ্যম
  10. ভিডিও গ্যালারী
  11. ফটোগ্যালারী
  12. আমাদের পরিবার
ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিরাজগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার, হত্যাকারী আপন ভাগনের স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় : ০১-০২-২০২৪ ০১:৪৪:১৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০১-০২-২০২৪ ০১:৪৪:১৮ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার, হত্যাকারী আপন ভাগনের স্বীকারোক্তি

সিরাজগঞ্জ সদর প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাবা, মা ও মেয়েকে জবাই করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাগনে রাজিব কুমার ভৌমিককে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার রাজিব উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ ভৌমিকের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিরা হলেন, তাড়াশ পৌর এলাকার শোলাপাড়া মহল্লার মৃত কালিচরণ সরকারের ছোট ছেলে বিকাশ সরকার (৪৫), বিকাশের স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৩৮) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারমিতা সরকার তুষি (১৫)।

৩১ জানুয়ারি, বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটায় সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো: আরিফুর রহমান মন্ডল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৫) নিহত বিকাশ সরকারের আপন ভাগনে। নিহতের বোন প্রমিলা রানীর ছেলে রাজিব। ভাগনে রাজিবের বাবা মারা যাওয়ার পর ২০২১ সাল থেকে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকারের সাথে যৌথভাবে খাদ্যশস্য কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত হয়।


বিকাশ চন্দ্র সরকার তার ভাগিনা রাজীর কুমার ভৌমিককে ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা প্রদান করেন। ব্যবসা চলমান থাকাকালীন হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে ব্যবসার লভ্যাংশসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা ফেরত দিলেও চলতি বছরে এসে হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিকের কাছে তার মামা নিহত বিকাশ চন্দ্র সরকার অতিরিক্ত ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেন।

বিকাশ চন্দ্র সরকার গত ২২ জানুয়ারি দাবিকৃত টাকা ৭/৮ দিনের মধ্যে ভাগিনাকে ফেরত দেয়ার জন্য অনেক চাপ দেয় এবং টাকার জন্য ভাগনে রাজিব ও বোনকে ফোনে অনেক বকাবকি করে। এতে হত্যাকারী রাজীব টাকা ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং মামার বকাবকিতে মনঃকষ্ট পাওয়ায় তার মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই জের ধরে গত ২৭ জানুয়ারি বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মামা বিকাশ সরকারকে ফোন করে পাওনা টাকা দিতে বাসায় আসতে চায়।

এ সময় নিহত বিকাশ চন্দ্র সরকার তাড়াশের বাহিরে থাকায় ভাগিনাকে টাকা নিয়ে বাসায় এসে মামির সাথে সাক্ষাৎ করে বাসাতেই থাকতে বলেন। পরে হত্যাকারী রাজীব কুমার বাসায় মামার অনুপস্থিতির সুযোগে মামি এবং মামাতো বোন তুষিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এসময় ভাগনে রাজীবকে কফি খাওয়ানোর জন্য মামি সন্ধ্যাকালীন পূজা শেষে বাসার নিচে দোকানে গেলে হত্যাকারী রাজীব ব্যাগে করে আনা লোহার রড দিয়ে তার মামাতো বোন পারমিতা সরকার তুষির মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হাসুয়া দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরমধ্যে মামি কফি কিনে বাসায় ফিরলে মামি স্বর্ণা সরকারকেও একইভাবে গলাকেটে হত্যা নিশ্চিত করে।

তাদেরকে হত্যার কিছুক্ষণের মধ্যে মামা বাসায় ঢুকলে তাকেও রড দিয়ে আঘাত করে এবং গলাকেটে হত্যা করে লাশ টেনে নিয়ে বেডরুমে রাখে। পরে রুমে তালা দিয়ে ঘাতক রাজিব উল্লাপাড়া নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। যাওয়ার পথে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার রড একটি পুকুরে ফেলে যায় এবং রক্তমাখা হাসুয়াসহ ব্যাগটি নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়।


সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল আরো জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামি গ্রেফতারে সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. সামিউল আলমের নেতৃত্বে উল্লাপাড়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত কুমার সূত্রধর, সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ মো. জুলহাজ উদ্দীন, জেলা গোয়েন্দা শাখার সমন্বয়ে ২০ সদস্যের একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়। পরে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামি গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।


এছাড়াও হত্যায় ব্যবহৃত আলামত জব্দ করা হয়। প্রসঙ্গত, তাড়াশ উপজেলা সদরের বারোয়ারি বটতলা মহল্লার নিজ বাড়িতে বসবাস ছিল বিকাশ এবং তার বড় ভাই প্রকাশ সরকারের। দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে নিহত বিকাশ ছিলেন সবার ছোট। শনিবার রাত থেকে বিকাশ এবং তার স্ত্রীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় স্বজনরা।


পরে তারা সোমবার রাতে বাড়িতে গিয়ে দেখে ঘর তালাবদ্ধ রয়েছে, তবে মোবাইল ফোন ভিতরে বাজছে। এ সময় পুলিশকে খবর দিলে তাড়াশ থানা পুলিশ রাত তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখতে পায় বিকাশ সরকার তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার ও মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার তুষির জবাই করা মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ৩০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার রাতে নিহতদের আত্মীয় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল গ্রামের সুকোমল চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Daily Sonali Rajshahi

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ